গতকাল রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহমুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। কৃষি সচিব বলেন, সারা বিশ্বে আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশের আম অত্যন্ত সুস্বাদু। প্রতি বছর এ দেশে প্রায় ২৭ লাখ টন আম উৎপাদন হয়। রপ্তানি হয় মাত্র এক থেকে তিন হাজার টন। চীনে আম রপ্তানির মধ্যে দিয়ে কৃষি রপ্তানিতে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে। আমের পাশাপাশি কাঁঠাল ও অন্যান্য ফল রপ্তানির জন্যও সরকার কাজ করছে। এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে বিবেচনায় নিয়ে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২৫ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। পরিকল্পনায় মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখির জন্য কতটুকু খাবারের প্রয়োজন সেটাও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অ্যাগ্রো প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে আমাদের মৌসুমি ফলগুলোকে কীভাবে ভ্যালুঅ্যাডেট পণ্যে রূপান্তর করে সারা বছর বিক্রি করা যায় সেটা নিয়েও চিন্তা চলছে।
গত বছর আগস্টে আকস্মিক বন্যায় দেশের ২৩টি জেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বিশেষ প্রণোদনা ও তদারকির মাধ্যমে সে সংকট কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের সহযোগিতা করা হয়েছে। চলতি বছরে ধান ও অন্যান্য ফসলের উৎপাদন সন্তোষজনক।
চীন সরকারের আগ্রহে দেশটিতে আম রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ। আগামী ২৮ মে আমের প্রথম চালান যাবে সেদেশে। বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, চীনে আম রপ্তানির মধ্যে দিয়ে কৃষি রপ্তানিতে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে। আগামী ২৮ মে প্রথমবারের মতো সেদেশে বাংলাদেশের আম যাচ্ছে।
কৃষি সচিব জানান, এবার আনুমানিক ৫০ টন আম চীনে রপ্তানি হবে। পর্যায়ক্রমে এর পরিমাণ বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি। আমের পাশাপাশি কাঁঠাল ও অন্যান্য ফল রপ্তানির জন্য সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি।
দেশের কৃষিকে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তি নির্ভর করতে সরকার কাজ করছে। এ লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠানের সেবাসমূহ একটি ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এম আই এস) আওতায় আনা হবে। দেশের প্রতিটি ভূমি মৌজাকে ডাটাবেজের আওতায় এনে সার, বীজ, বালাইনাশক, সেচ, ফসল বৈচিত্র্য, আবহাওয়া, রোগবালাই কৃষি সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য সন্নিবেশিত একটি মোবাইল অ্যাপস ‘খামারি’ চালু করা হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান
এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, চীনসহ অন্যান্য দেশে রপ্তানির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রণোদনার মাধ্যমে আম চাষে কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় কৃষি উৎপাদনকে টেকসই ও যুগোপযোগী করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। ২০৫০ সাল পর্যন্ত সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চয়তা দিতে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদেই এ পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কৃষি সচিব জানান, দেশের কৃষিকে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তি নির্ভর করতে সরকার কাজ করছে। এ লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠানের সেবাসমূহ একটি ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এম আই এস) আওতায় আনা হবে। দেশের প্রতিটি ভূমি মৌজাকে ডাটাবেজের আওতায় এনে সার, বীজ, বালাইনাশক, সেচ, ফসল বৈচিত্র্য, আবহাওয়া, রোগবালাই কৃষি সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য সন্নিবেশিত একটি মোবাইল অ্যাপস ‘খামারি’ চালু করা হচ্ছে। এ অ্যাপসের মাধ্যমে কৃষক তার জমিতে কোন মৌসুমে কী ফসল চাষ করতে হবে, এর পরিচর্যা থেকে শুরু করে ফসল উঠানো পর্যন্ত সব তথ্য ও সেবা পাবে।
তিনি বলেন, দেশের শিক্ষিত নারী ও তরুণদের কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করবে।
সচিব জানান, চলতি বছরে দেশে ফসলের উৎপাদন ভালো হয়েছে। ধান ও অন্যান্য ফসলের উৎপাদন সন্তোষজনক। পচনশীল শাক-সবজি, আলু ও পেঁয়াজ সংরক্ষণে আধুনিক হিমাগার ও সংরক্ষণাগার তৈরি করা হচ্ছে।
গত বছর আগস্টে অকস্মাৎ বন্যায় দেশের ২৩টি জেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বিশেষ প্রণোদনা ও তদারকির মাধ্যমে সে সংকট কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের সহযোগিতা করা হয়েছে।
সরকারের সঠিক পদক্ষেপ ও নেতৃত্বের কারণে সার ক্রয়ের বিশাল অঙ্কের বকেয়া পরিশোধ করে দেশে সারের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। দেশে বর্তমানে কোনো সার সংকট নেই। ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহমুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।