চাকরি দেয়ার প্রলোভনে দীর্ঘদিন আটক রেখে ধর্ষণ, ভুক্তভোগীর বোনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের চাকরিচ্যুত জেলা রেজিস্ট্রার ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে এক নারীকে বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ ও ভুক্তভোগীর স্কুলশিক্ষিকা বোনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার মোরেলগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে ভুক্তভোগী পরিবার।
অভিযুক্ত ফজলার রহমান ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার কুচিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান মোল্লার ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ধর্ষণের শিকার নারীর স্কুলশিক্ষিকা বোন। তিনি জানান, দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত জেলা রেজিস্ট্রার ফজলার রহমান তাঁর বোনকে সাব রেজিস্ট্রার অফিসে চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে তাঁর বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করাতে থাকেন। বিপত্নীক ফজলুর রহমান এক পর্যায়ে তাঁর বোনকে ধর্ষণ করেন। পরে বিয়ের আশ্বাসে তাঁর বোনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এভাবে বাড়িতে কয়েক বছর আটকে রেখে ভুক্তভোগীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যান। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তিনি ভুক্তভোগীকে বিয়ে বা চাকরি প্রদান কোনোটিই করেননি। এক পর্যায়ে ফজলারের ছলচাতুরির বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁর বোন নিরুপায় হয়ে নিজের বাড়িতে চলে আসেন। পরে পারিবারিক সম্মান রক্ষার্থে তিনি উদ্যোগী হয়ে তাঁর বোনকে অন্যত্র বিয়ে দেন। বিষয়টি জানতে পেরে ফজলার ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে (স্কুলশিক্ষিকা) একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়াতে থাকেন। একটি সিআর মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করালে তিনি ৫ দিন কারাগারে ছিলেন। যার কারণে তিনি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্তও হন। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে ফজলার তাঁর বিরুদ্ধে বিবিধ বিষয় নিয়ে থানায় ও আদালতে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এসব মামলায় ফজলার তার আপন ফুফাতো ভাই নুরুজ্জামান মোল্লাকেও আসামি করে হয়রানি করছেন। এভাবে তাঁকে একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির কারণে তিনি নাবালক সন্তান ও পরিবার নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। তিনি ফজলার রহমানের দায়ের করা এসব মিথ্যা মামলাগুলো থেকে তাঁকে রক্ষায় প্রশাসনের কাছে আইনি সহায়তার কামনা করেন।
ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষিকা বলেন, ফজলার রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মোট ৭টি মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলার মধ্যে ফজলার ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার থাকাকালীন দুর্নীতির দায়ে ৬টি ও ফরিদপুরে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাকরিচ্যুত বাগেরহাট জেলা রেজিস্ট্রার মো. ফজলার রহমানের ব্যক্তিগত নম্বরে কল দেওয়া হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে আবারও কল দেওয়া হলে তিনি ব্যস্ত আছেন এবং এ বিষয়ে কথা বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।