ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার প্রতিশোধ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রপ্তানি অনেকটা বন্ধ করে দিয়েছে মস্কো। এ অবস্থায় চলতি বছর রাশিয়ার পরমাণু জ্বালানির সবচেয়ে বড় আমদানিকারক হতে যাচ্ছে বেইজিং।
শুল্ক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত দশ মাসে চীন রাশিয়া থেকে ৮৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কিনেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩.২ গুণ বেশি। শুধু অক্টোবরেই এর আমদানি সেপ্টেম্বরের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে ২১ কোটি ৬০ লাখ ডলারে পৌঁছেছে।
একই সময়ে দক্ষিণ কোরিয়াও মস্কো থেকে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের ক্রয় বাড়িয়ে ৬৫ কোটি ডলারে উন্নীত করেছে।রাশিয়া থেকে দ্বিতীয় বৃহত্তম পারমাণবিক জ্বালানি আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে তারা।
গত বছরও রাশিয়ার ইউরেনিয়ামের প্রধান ক্রেতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত নয় মাসে ৫৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার মূল্যের রুশ পরমাণু জ্বালানি আমদানি করে দেশটি তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
এ বছরের শুরুর দিকে ওয়াশিংটন রাশিয়ার স্বল্প-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়। তবে যেসব ক্ষেত্রে বিকল্প নেই বা 'যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে' বিবেচিত হয়, সেসব ক্ষেত্রে ২০২৮ সাল পর্যন্ত অল্প করে আমদানির ছাড় দেওয়া হয়েছে।
ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মতে, ২০২২ সালেও ইউরেনিয়াম রপ্তানিতে রাশিয়ার শীর্ষ বিদেশি গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন বাণিজ্যিক পারমাণবিক চুল্লিগুলোতে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রায় এক চতুর্থাংশ সরবরাহ করতো মস্কো।
রাশিয়ায় হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ জায়গা। বিশ্বের মোট পরমাণু সক্ষমতার প্রায় অর্ধেকই তাদের হাতে। বাজারে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রায় ৪০ শতাংশই মস্কোর বলে অনুমান করা হয়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত সেপ্টেম্বরে এক সরকারি বৈঠকে বলেছিলেন, কিছু দেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেও খুশি মনে রাশিয়ার সম্পদ ও পণ্য মজুদ করছে। তিনি বিশ্ববাজারে ইউরেনিয়ামসহ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাঁচামালের রপ্তানি সীমিত করার পরামর্শ দেন।