লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া মজুমদার বাড়ির কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মান্নান মজুমদার এর সন্তান, বাংলাদেশের ১ম নারী এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদার বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ অর্জন করায় রামগঞ্জ বাসীর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
নিশাত মজুমদার এভারেস্টজয়ী প্রথম বাংলাদেশি নারী। তিনি ২০১২ সালের ১৯ মে শনিবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেন। পাশাপাশি মৃত্যুকে দেখে এসেছেন খুব কাছ থেকে। তার পরও অভিযান তাঁকে ডাকে।
তিনি জয় করেছেন বাংলাদেশের কেওক্রাডং, নেপালের মেরা পর্বত, অন্নপূর্ণা হিমালয়ের সিঙ্গুচুলি। অংশ নিয়েছেন মাকালু পর্বতসহ আরো কয়েকটি অভিযানে।
নিশাত জন্মেছিলেন ১৯৮১ সালের ৫ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুরে। তাঁর বাবার নাম আবদুল মান্নান মজুমদার।
তিনি ব্যবসায়ী। মা আশুরা মজুমদার একজন গৃহিণী। নিশাত চার ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। শৈশবে তিনি বৈমানিক হতে চেয়েছিলেন।
তিনি ১৯৯৭ সালে ঢাকার ফার্মগেটের বটমূলী হোম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৯৯ সালে শহীদ আনোয়ার গার্লস কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা সিটি কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন।
শৈশবে নিশাত বৈমানিক হতে চেয়েছিলেন; কিন্তু হয়েছেন পর্বতারোহী। পেশাগত জীবনে তিনি ঢাকা ওয়াসায় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।
নিশাত মজুমদার ২০০৩ সালে এভারেস্ট বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া (৩ হাজার ১৭২ ফুট) কেওক্রাডং জয় করেন। ২০০৬ সালের মার্চে বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে বিএমটিসি আয়োজিত বাংলাদেশের নারী অভিযাত্রীদলের সঙ্গে ফের কেওক্রাডং চূড়ায় ওঠেন।
একই বছরের সেপ্টেম্বরে বিএমটিসি আয়োজিত নারী অভিযাত্রীদলের সঙ্গে তিনি এভারেস্ট বেস ক্যাম্প (১৭ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা) ট্র্যাকিংয়ে অংশ নেন। এরপর ২০০৭ সালের মে মাসে বিএমটিসির অর্থায়নে দার্জিলিংয়ের হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে মৌলিক পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে হিমালয়ের মেরা পর্বতশৃঙ্গ (২১ হাজার ৮৩০ ফুট) জয় করেন।
২০১২ সালের ৫ জুন রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ঢাকা ওয়াসা ভবনের চতুর্থ তলায় অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসা পুরস্কার ও সম্মাননাস্বরূপ ওয়াসার পক্ষ থেকে নিশাতকে পাঁচ লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট এবং তাঁর জন্য বাসা বরাদ্দ করা হয়। কারিগরি কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে তাঁকে ২৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। এ ছাড়া তিনি ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় অ্যাডভেঞ্চার উৎসব, ২০২০’-এ বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন।